আমাকে একখানা নতুন রবিঠাকুর দিতে পারো ?
যে বচনে বাচনে আমার ক্লান্তি দূর করবে !
না না, ঠাকুর যা লিখেছে সে তো পুরনো হয়ে গেছে,
এ’রবি আমার প্রভাতে উঠবে, আমার সাথেই অস্ত যাবে।
ভীষণ রাগ হয়, যখন দেখি, তার সব গান, কবিতা
আমাকে নিয়েই লেখা, এ’ও কি করে সম্ভব হলো ?
আমি তো আজ এই মুহূর্তের বর্তমানে দাঁড়িয়ে আছি
ঠাকুর কি করে অতীতে আমাকে জেনে ফেললো !
ডাক্তার তো শুধু শরীরের ভেতর আর বাইরের ছবি তোলে
কিন্তু রবিকে দেখো, তাঁর রশ্মির ছটায় মনের ছবি কিরকম বাইরে চলে আসছে ,
কোন গোপন করার উপায় নেই, সব কিছু ছন্দে দ্বন্দে মিশিয়ে ঝাঁকিয়ে দিল
তাঁর অতীত শিল্পকর্ম দিয়ে, মনটাকে গলিয়ে যেন নিংড়ে বার করে আনছে।
না, না, আমি এ’ সইতে পারবোনা, আমি আধুনিক যুগের নারী
আমাকে বুঝতে হলে ঠাকুর, তোমাকেও নতুন হয়ে আসতে হবে!
কাঁড়িকাঁড়ি শুধু লেখা আর গান দিয়ে তুমি আমাকে ঠকাতে পারবেনা,
আমার ভাবনা ছুঁয়ে ছুঁয়ে যে কালির ফোয়ারা ছোটাবে তুমি,তা শুধু আমারই রবে।
যেদিন প্রথম তোমায় খুঁজে পেলাম বুকের ভেতরে, সেই ছিল আমার প্রথম প্রেম
কেঁদে হেসে লুটিয়ে ভাসলাম তোমার সাথে একই ডিঙিতে নিরুদ্দেশে,
তুমি এক তোড়া বসন্ত এনে দিয়ে বললে, ‘নাও’, এ’সবই শুধু তোমাকেই দিলাম
আগুন লেগে গেল, শরীরে, মনে, ‘তোমায় পাবো তো’? ঘোরের মধ্যেই বলে উঠলাম তোমার উদ্দেশে !
অনেকগুলো বসন্ত পেরিয়ে, আজ এক পরিণত মন নিয়ে অপেক্ষা করে আছি,
অবাক হয়ে দেখি তোমার প্রসারিত বাহু, আজো আগলে রেখেছে আগের মতো,
মৃত্যুহীন, ধ্বংসহীন, অবিনশ্বর তুমি, ঋণের এক মস্ত বোঝা চাপিয়ে দিয়েছো মনের উপর
তাই চাই অব্যাহতি, এক নতুন রবি, এক নতুন ঠাকুর, নতুন করে মেটাবো বাসনা, ফেলে এসেছি আর যতো।
বনানী ———